ইমেজ টু টেক্সট
OCR প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমেজ থেকে টেক্সট বের করুন
কি ইমেজ টু টেক্সট ?
OCR (অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন) প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইমেজ থেকে টেক্সট বের করার জন্য ইমেজ টু টেক্সট হল একটি বিনামূল্যের অনলাইন টুল। আপনি যদি ইমেজ টু টেক্সট কনভার্টার, ইমেজ ওসিআর বা ইমেজ টু ওয়ার্ড কনভার্টার চান, তাহলে এটি আপনার টুল। এই বিনামূল্যের অনলাইন ইমেজ টু টেক্সট কনভার্টারের সাহায্যে, আপনি দ্রুত এবং সহজে ইমেজ থেকে টেক্সট এক্সট্র্যাক্ট করতে পারেন এবং বিভিন্ন ফরম্যাটে যেমন সার্চযোগ্য পিডিএফ, সিম্পল টেক্সট বা ফরম্যাটেড টেক্সট যেমন MS-Docx এবং HTML এ এক্সপোর্ট করতে পারেন।
কেন ইমেজ টু টেক্সট ?
বর্তমান যুগে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) আমাদের জীবনযাত্রার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এক বিপ্লব এনেছে। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হল ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করা বা ইমেজ থেকে টেক্সট এক্সট্রাকশন (Extract Text from Image)। এই প্রযুক্তিটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের কাজকে অনেক সহজ করে দিয়েছে এবং নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে।
ঐতিহ্যগতভাবে, কোনো ছবি বা স্ক্যান করা ডকুমেন্ট থেকে লেখা পাওয়ার একমাত্র উপায় ছিল সেটি হাতে টাইপ করা। এই প্রক্রিয়াটি ছিল সময়সাপেক্ষ, ক্লান্তিকর এবং ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। কিন্তু এআই-এর বিকাশের ফলে এখন আমরা খুব সহজেই এবং দ্রুততার সাথে ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করতে পারি।
ছবি থেকে লেখা উদ্ধারের গুরুত্ব আলোচনা করলে প্রথমেই আসে ডেটা এন্ট্রির কথা। বিভিন্ন অফিসে, লাইব্রেরিতে বা সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রচুর পুরনো নথি থাকে যা স্ক্যান করে রাখা হয়। এই নথিগুলোকে ডিজিটালাইজ করার জন্য ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করা একটি অপরিহার্য প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে খুব কম সময়ে এবং নির্ভুলভাবে ডেটা এন্ট্রি করা সম্ভব।
শিক্ষা ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক। শিক্ষার্থীরা বইয়ের কোনো পাতার ছবি তুলে বা শিক্ষকের দেওয়া কোনো হ্যান্ডআউটের ছবি তুলে সরাসরি সেই লেখাটিকে টেক্সট ফরম্যাটে রূপান্তরিত করতে পারে। এর ফলে তারা সহজেই সেই টেক্সটটিকে এডিট করতে পারে, নোট নিতে পারে অথবা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে।
সাংবাদিকতা এবং গবেষণার ক্ষেত্রেও ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুরনো দিনের খবরের কাগজের কাটিং, দুর্লভ পান্ডুলিপি অথবা অন্য কোনো ঐতিহাসিক দলিল থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য এই প্রযুক্তিটি অপরিহার্য।
ব্যবসা ক্ষেত্রেও এর ব্যবহার বাড়ছে। বিভিন্ন বিল, চালান বা অন্য কোনো বাণিজ্যিক নথির ছবি তুলে সরাসরি সেই তথ্যগুলোকে অ্যাকাউন্টিং সফটওয়্যারে ইনপুট করা যায়। এর ফলে হিসাব রাখার কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায় এবং সময় বাঁচে।
দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য এই প্রযুক্তি এক আশীর্বাদ স্বরূপ। তারা কোনো বইয়ের পাতা বা সাইনবোর্ডের ছবি তুলে সেটিকে টেক্সটে রূপান্তরিত করে স্পিচ-টু-টেক্সট (Speech-to-Text) প্রযুক্তির মাধ্যমে শুনতে পারেন। এর ফলে তাদের পক্ষে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায় এবং তারা সমাজের মূল স্রোতে আরও সহজে মিশে যেতে পারেন।
আইনজীবীরাও এই প্রযুক্তির মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন। তারা বিভিন্ন মামলার নথি, সাক্ষীর জবানবন্দী অথবা অন্য কোনো আইনি কাগজপত্রের ছবি তুলে সেগুলোকে টেক্সট ফরম্যাটে রূপান্তরিত করে সহজেই বিশ্লেষণ করতে পারেন।
বর্তমানে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ এবং অনলাইন টুল পাওয়া যায় যেগুলো ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করতে পারে। এই টুলগুলো এআই এবং অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন (Optical Character Recognition বা OCR) প্রযুক্তি ব্যবহার করে কাজ করে। OCR হল এমন একটি প্রযুক্তি যা ছবি থেকে অক্ষরগুলোকে চিনতে পারে এবং সেগুলোকে টেক্সটে রূপান্তরিত করতে পারে।
তবে ছবি থেকে লেখা উদ্ধারের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যাও রয়েছে। ছবির গুণমান খারাপ হলে, লেখা অস্পষ্ট হলে অথবা হাতের লেখা হলে অনেক সময় এই প্রযুক্তি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। এছাড়াও, বিভিন্ন ফন্ট এবং ভাষার ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তির কার্যকারিতা ভিন্ন হতে পারে।
তবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমাগত উন্নতির সাথে সাথে এই সমস্যাগুলোও ধীরে ধীরে দূর হয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা আরও উন্নত এবং নির্ভুল ছবি থেকে লেখা উদ্ধার করার প্রযুক্তি দেখতে পাবো, যা আমাদের জীবনকে আরও সহজ এবং উন্নত করে তুলবে। এই প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এবং কর্মক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।